আজ বুধবার, ২৫শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

গোগনগরে অবৈধ হাট

সংবাদচর্চা রিপোর্ট

নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার পশুর হাটটির দরপত্র এখনও সম্পন্ন হয়নি। ইজারা না পেলেও হাটের কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন। তার লোকজন নদীপথে জোর করে বেপারীদের ট্রলার থামিয়ে রেখে দিচ্ছেন পশু। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগল বোঝাই ট্রলার আটকে জোর করে পশু নামানো হয় এই হাটে।

সদর উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় এবার ১১টি পশুর হাটের দরপত্র আহবান করা হয়েছে। গত ২১ জুলাই ৯টি হাটের ইজারা সম্পন্ন হয়েছে। গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার দেলোয়ার হোসেনের নিজস্ব ভূমির হাটটির ইজারা এখনও সম্পন্ন হয়নি। আগামী ২৬ জুলাই এই হাটের দরপত্র উন্মুক্ত করা হবে। তবে ইজারা না পেলেও হাটের সকল কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছেন দেলোয়ার হোসেন। জোর করে নামিয়ে রাখছেন পশু। একই স্থানে গতবছরও হাটের ইজারা পেয়েছিলেন তিনি।

সরেজমিনে বেপারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, সিরাজগঞ্জের শাহ্জাদপুর থেকে ট্রলারবোঝাই পশু নিয়ে নারায়ণগঞ্জ সিটি কর্পোরেশন এলাকার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন বালুর মাঠের পশুর হাটের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তারা। ওই হাটের ইজারাদার শাহ্ আলমের কাছ থেকে দাদনও (অগ্রীম টাকা) নিয়েছেন বলে জানান। কিন্তু জোর করে তাদের ট্রলার নিয়ে আসা হয়েছে সদর উপজেলার গোগনগর ইউনিয়নের বাড়িরটেক এলাকার হাটে।

পশুর বেপারী শাহাদাত হোসেন জানান, ট্রলার নিয়ে যাবার সময় মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিমে তাদের থামিয়ে দেওয়া হয়। তারপর জোর করে নিয়ে আসা হয় এই হাটে। সাত বেপারীর ২৬টি গরু ও ৪টি ছাগল নামানো হয়েছে এই হাটে।

তিনি বলেন, গেছেবারও জোর কইরা এইখানে নামানো হইছিল। এইদিকে থাইকা অনেক ট্যাকা লস হইয়া গেছে। তাই চাইছিলাম বালুর মাঠের দিকে যাইতে। ওই হাটের মহাজনের থেইকা দাদনও নিছি। হেরা জোর করে নামাইছে এইখানে। যার যেইখানে জোর সে সেইখানে নামাইয়া দেয়। আমরা তো জোর খাটাইতে পারি না।

গোদনাইলের ইব্রাহিম টেক্সটাইল মিল সংলগ্ন বালুর মাঠের ইজারাদার শাহ্ আলম বলেন, আমার হাটে আসা গরু জোর করে গোগনগরের দেলোয়ারের হাটে নামিয়ে রাখা হয়েছে। আমি থানায় জানিয়েছি। প্রতি বছরই বিভিন্ন হাটে জোর করে গরু নামিয়ে রাখা হয়। এ বিষয়ে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপ এবং নদীপথে পুলিশি টহল দাবি করেন এই ইজারাদার।

এদিকে মুঠোফোনে অভিযুক্ত গোগনগর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন বলেন, বুধবার সকালে ইজারার জন্য কাগজপত্র জমা দেয়া হইছে। আমিই পাবো হাট। আর না পেলে যে পাবে তাকে দিয়ে দেবো।

ইজারা পাবার আগেই আপনি হাটের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন কিনা এমন প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি তিনি। জোর করে গরু নামানোর বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আসছি সিরাজগঞ্জ। আমার লোকজন এমন কিছু করছে কিনা তা জানা নাই।’


এ বিষয়ে কথা বলতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নাহিদা বারিকের মুঠোফোনের নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি।

তবে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জায়েদুল আলম বলেন, জোর করে পশু নামানোর বিষয়টি জানা নেই। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। হাট অবৈধ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ